ঢাকা ১০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ভোলার সাবেক এমপি মুকুলের বিরুদ্ধে মামলা করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা Logo ময়মনসিংহের সিএনজি অটোরিকশা চোরচক্রের ৬ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার… Logo গাজীপুরে বিসিএস আনসার কর্মকর্তা ও রিক্রুট সিপাহিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত Logo ময়মনসিংহের ভালুকায় দলিল লেখক সমিতির সভাপতি-রাব্বানী ,সম্পাদক-আমির হোসেন। Logo ঢাকায় শিক্ষা ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে লক্ষীপুরে শিক্ষকদের মানববন্ধন Logo ময়মনসিংহ টু ত্রিশাল অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সার দাপট… Logo শ্রেণি পাঠদানে প্রাথমিক শিক্ষায় পাঠ পরিকল্পনার অপরিহার্যতা Logo বাগমারায় শাহ সিমেন্টের পক্ষ থেকে নির্মাণ সাথী প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত Logo প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্কের গুরুত্ব Logo শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে সমাবেশ প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

লক্ষীপুরের রায়পুরে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা

মোঃ আবদুল লতিফ
  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪ বার পড়া হয়েছে

মো:আবদুল লতিফ,লক্ষীপুর প্রতিনিধি:-
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সরকারি সিআইপির আওতাধীন তিন কিলোমিটার খালের প্রায় এক কিলোমিটারই দখল করে ফেলেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। রায়পুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলিক মহা সড়কের সরকারি ফিস হ্যাচারি থেকে মধুপুর জনতা বাজার পর্যন্ত দখলদাররা খালটির বিভিন্নস্থানে ১৫টি বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ ও মাছ চাষ করে দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ওই এলাকার ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারনে বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে কৃষকদের। এঘটনায় স্থানীয়রা বাঁধ অপসারণ করে খাল প্রবহমান রাখতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, রায়পুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলিক মহা সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সরকারি সিআইপির এই খাল দিয়ে একসময় বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। ব্যবসায়ীরা মালামাল নৌকায় নিয়ে আসতো। এলাকার চাষীরা তাদের ধান-চাল বিক্রির জন্য নৌকায় করে হাট-বাজারে নিয়ে যেত। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৩০-৩৫ ফুট। এই খাল দিয়ে এলাকার ফসলি জমির পানি নিষ্কাশন হতো। ২-৩ বছর আগে সেই খালের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বাঁধ দেওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে দেনায়েতপুর ও মধুপুর গ্রামের ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খালের ২ পাড়ের অন্তত ১০ হাজার মানুষ।

সরজমিনে গিয়ে জানান, মধুপুর গ্রামের শফিক মাষ্টার, জসিম, রিপন ও হেদায়েত উল্যা, মোস্তান বাড়ীর লোকজন, নাসরিন মঞ্জিলের ইউসুফ মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম খোরশেদ আল, ফারুক হাফেজ, ফজলুল করিম, ব্যবসীয়ী  শরিফ ও রহমান আলী মাঝি বাড়ীরর লোকজনসহ কতিপয় প্রভাবশালী অন্যায় ও বেআইনিভাবে সিআইপর এই এক কিলোমিটার খালে ১৫টি বাঁধ দেওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বসতবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়ে। গাছপালার গোড়ায় পানি জমে মরে যাচ্ছে। সরকারি খালে ব্যক্তি মালিকানায় বাঁধ দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে খালের পাড়ের বাসিন্দারা। এই অস্থায় খালের পাড়ের বাসিন্দারা প্রতিকার চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানান।

সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা ব্যবসায়ী শরিফ হোসেন দখলের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, খাল ভরাট করে অনেকেই বাড়িতে ঢোকার রাস্তা করেছে। সেখানে খাল বন্ধ হলে কিছু করার নেই। সবাই তাদের বাড়ীর সামনে বাঁধ দিয়ে রাস্তা করায় ছোট ছোট পুকুর তৈরি হয়েছে। তাই আমি ওই পুকুরে মাছ চাষ করি। এখানে অনুমতির কি আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মহি উদ্দিন মিলন বলেন, সরকারি খালের এক কিলোমিটার অংশ বাঁধ দেওয়ায় খালটিতে প্রায় ১০টি পুকুরে পরিণত হয়েছে। খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় কৃষকদের জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সাবেক পৌর সভার কমিশনার জাকির হোসেন নোমান  বলেন, দখল করা এক কিলোমিটার খালের উপর পরিকল্পিতভাবে ৩টি সড়ক ও দু’টি ব্রিজ নির্মাণ করে সরকার। ওইসব সড়ক ও ব্রিজ ব্যবহার না করে যে যার মত করে বাড়ীর সামনে দিয়ে খাল ভরাট করে রাস্তা তৈরি করছে। খাল পাড়ে এসে কেউ একটি বাড়ী করলেই একটি রাস্তা তৈরি করছে। এতে এখন খালের কোন অস্তিত নেই। 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমান বলেন, সরকারি খালে কেউ বাঁধ কিংবা রাস্তা তৈরি করে পুকুর করার সুযোগ নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান।

ট্যাগস :
Translate »

লক্ষীপুরের রায়পুরে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মো:আবদুল লতিফ,লক্ষীপুর প্রতিনিধি:-
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সরকারি সিআইপির আওতাধীন তিন কিলোমিটার খালের প্রায় এক কিলোমিটারই দখল করে ফেলেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। রায়পুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলিক মহা সড়কের সরকারি ফিস হ্যাচারি থেকে মধুপুর জনতা বাজার পর্যন্ত দখলদাররা খালটির বিভিন্নস্থানে ১৫টি বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ ও মাছ চাষ করে দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ওই এলাকার ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারনে বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে কৃষকদের। এঘটনায় স্থানীয়রা বাঁধ অপসারণ করে খাল প্রবহমান রাখতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, রায়পুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলিক মহা সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সরকারি সিআইপির এই খাল দিয়ে একসময় বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। ব্যবসায়ীরা মালামাল নৌকায় নিয়ে আসতো। এলাকার চাষীরা তাদের ধান-চাল বিক্রির জন্য নৌকায় করে হাট-বাজারে নিয়ে যেত। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৩০-৩৫ ফুট। এই খাল দিয়ে এলাকার ফসলি জমির পানি নিষ্কাশন হতো। ২-৩ বছর আগে সেই খালের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বাঁধ দেওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে দেনায়েতপুর ও মধুপুর গ্রামের ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খালের ২ পাড়ের অন্তত ১০ হাজার মানুষ।

সরজমিনে গিয়ে জানান, মধুপুর গ্রামের শফিক মাষ্টার, জসিম, রিপন ও হেদায়েত উল্যা, মোস্তান বাড়ীর লোকজন, নাসরিন মঞ্জিলের ইউসুফ মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম খোরশেদ আল, ফারুক হাফেজ, ফজলুল করিম, ব্যবসীয়ী  শরিফ ও রহমান আলী মাঝি বাড়ীরর লোকজনসহ কতিপয় প্রভাবশালী অন্যায় ও বেআইনিভাবে সিআইপর এই এক কিলোমিটার খালে ১৫টি বাঁধ দেওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বসতবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়ে। গাছপালার গোড়ায় পানি জমে মরে যাচ্ছে। সরকারি খালে ব্যক্তি মালিকানায় বাঁধ দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে খালের পাড়ের বাসিন্দারা। এই অস্থায় খালের পাড়ের বাসিন্দারা প্রতিকার চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানান।

সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা ব্যবসায়ী শরিফ হোসেন দখলের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, খাল ভরাট করে অনেকেই বাড়িতে ঢোকার রাস্তা করেছে। সেখানে খাল বন্ধ হলে কিছু করার নেই। সবাই তাদের বাড়ীর সামনে বাঁধ দিয়ে রাস্তা করায় ছোট ছোট পুকুর তৈরি হয়েছে। তাই আমি ওই পুকুরে মাছ চাষ করি। এখানে অনুমতির কি আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মহি উদ্দিন মিলন বলেন, সরকারি খালের এক কিলোমিটার অংশ বাঁধ দেওয়ায় খালটিতে প্রায় ১০টি পুকুরে পরিণত হয়েছে। খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় কৃষকদের জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সাবেক পৌর সভার কমিশনার জাকির হোসেন নোমান  বলেন, দখল করা এক কিলোমিটার খালের উপর পরিকল্পিতভাবে ৩টি সড়ক ও দু’টি ব্রিজ নির্মাণ করে সরকার। ওইসব সড়ক ও ব্রিজ ব্যবহার না করে যে যার মত করে বাড়ীর সামনে দিয়ে খাল ভরাট করে রাস্তা তৈরি করছে। খাল পাড়ে এসে কেউ একটি বাড়ী করলেই একটি রাস্তা তৈরি করছে। এতে এখন খালের কোন অস্তিত নেই। 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমান বলেন, সরকারি খালে কেউ বাঁধ কিংবা রাস্তা তৈরি করে পুকুর করার সুযোগ নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান।