মোঃ ইদ্রিস আলী
কালিগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের বসন্তপুরে নদীবন্দর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে আগামি কাল। সেই মহেন্দ্রক্ষনের অপেক্ষায় এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় ১৩ নভেম্বর সোমবার খুলনা জনসভা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর নদীবন্দর কার্যক্রম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ঘোষণা করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই মহেন্দ্রক্ষনের অপেক্ষায় এলাকাবাসী।

বসন্তপুর নৌবন্দরটি পুরোদমে চালু হলে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের বসন্তপুরে তথা দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় রাজা প্রতাপাদিত্য, রাজা বিক্রমাদিত্য, ও রাজা বসন্ত রায়ের স্মৃতি বিজড়িত বাংলাদেশের এপারে বসন্তপুর এবং ওপারে পশ্চিমবঙ্গের হিঙ্গলগঞ্জের সাথে ইছামতি নদী, কালিন্দী নদী ও কাকশিয়ালী নদীর ত্রিমোহনায় ৫৮ বছর আগে বসন্তপুরে নদীবন্দর চালু ছিল।

১৯৬৫ সালের দিকে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বসন্তপুর নৌ-বন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়।

কালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয় এর অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও প্রাবান্ধিক গাজী আজিজুর রহমান জানান ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিক বৃন্দ ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী শিল্পী নাট্য শিল্পী কবি সাহিত্যিকদের প্রায় শতাধিক ব্যক্তিদের নিয়ে বসন্তপুর রাম জননী ভবনে একটি ভ্রমণ পিকনিক ও বিনোদনের আয়োজন করা হয়।

সেই অনুষ্ঠানে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল সাহেব কে আমরা বোঝাতে সক্ষম হই এখানে সরকারি জায়গা ১৪ বিঘা পড়ে আছে সেই জায়গাকে ঘিরে একটি পার্ক অথবা নৌবন্দরটি পুনরায় চালু করা গেলে এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটবে।

তিনি বিষয়টি আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন এবং তৎকালীন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল মহোদয়কে অবহিত করেন মোস্তফা কামাল মহোদয় বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রেরণ করেন।

আজ বসন্তপুর নদীবন্দর টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে ফুলেফলে পরিপূর্ণ হবে।

কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন কালীগঞ্জের বসন্তপুর নৌবন্দর এলাকা দিয়ে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামাল এই এলাকা দিয়ে ভারতে গিয়েছিল বসন্তপুর এটি একটি স্মৃতি বিজড়িত এলাকা তিনি আরো বলেন আমি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল মহোদয় কে বসন্তপুর নৌবন্দর পুনরায় চালুর বিষয়ে অভিহিত করি এবং মিটিং এর মাধ্যমে তুলে ধরি বসন্তপুর নদীবন্দর ভিত্তিপ্রস্তরের স্থাপনের মধ্য দিয়ে এলাকার অর্থনৈতিক মুক্তির এক নতুন যাত্রা যাত্রা শুরু হচ্ছে।

এলাকাবাসী খুবই আনন্দিত এবং খুশি এই নদীবন্দরটি চালু হলে এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং বেকার সমস্যার সমাধানসহ ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে তিনি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর বসন্তপুর নৌ-বন্দরটি পুনরায় চালুর দাবীর প্রেক্ষিতে সীমানা নির্ধারণ করে একটি গেজেট প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করে।

এতে করে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে কালিগঞ্জসহ সাতক্ষীরা জেলাবাসি।

আগামি ১৩ নভেম্বর গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনার জনসভা থেকে বসন্তপুর নৌ-বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচনের ঘোষণা করবেন । বসন্তপুর নদীবন্দর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকে ঘিরে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ উল্লাস লক্ষ্য করা গেছে।

ইতিমধ্যে খুলনা বিআইডব্লিউআইটি ও কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বসন্তপুর নদী বন্দর ভিত্তি প্রস্তর এলাকায় অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

বসন্তপুর নদীবন্দর এলাকা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা বুশরা, গতকাল রবিবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আজহার আলী এলাকা পরিদর্শন করেন এ সময় নৌবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক এজাজ আহমেদ স্বপন, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু, তথ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এসএম আহমাদুল্লাহ বাচ্চু, কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন মথুরেশপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখলেসুর রহমান মুকুল, খুলনা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষরে প্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এই বসন্তপুর নদীবন্দর স্থাপন হলে সাতক্ষীরায় ভোমরা স্থলবন্দর ও বসন্তপুরের নদী বন্দর সাতক্ষীরা জেলায় দুটি বন্দরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে স্থল ও নদী বন্দর হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এলাকার আত্মসামাজিক অবস্থা বদলে যাবে বেকার সমস্যার সমাধান হবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।