শেরপুরে আজ ভাষা সৈনিক আব্দুর রশীদ এর নবম মৃত্যুবার্ষিকী
- আপডেট সময় : ১০:৩৩:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩ ৯৩ বার পড়া হয়েছে
আজ (সোমবার) ৫ ই জুন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের শেরপুর অঞ্চলের অন্যতম সদস্য ভাষা সৈনিক জননেতা আব্দুর রশীদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি দৈনিক যুগান্তর, এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজ ও বিডি নিউজ২৪ ডটকম এর শেরপুর জেলা প্রতিনিধি প্রখ্যাত সাংবাদিক এড. মো. আব্দুর রহিম বাদলের বাবা।
ভাষা সৈনিক জননেতা আব্দুর রশীদের মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলেক্ষে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। এ উপলক্ষে সোমবার সকালে শেরপুর টাউনের শেখহাটি মহল্লায় ভাষা সৈনিক আব্দুর রশীদ কুটিরে প্রয়াত ভাষা সৈনিকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, চাপাতলী পৌর কবরাস্থানে তাঁর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত করা হয়। এছাড়াও তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কোরআন খানী ও বিভিন্ন জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
আব্দুর রশীদ ১৯৩১ সালের ২৫ জানুয়ারি শেরপুর পৌর টাউনের শেখহাটি মহল্লায় এক সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া একাডেমীতে অধ্যয়নকালে ছাত্রাবস্থায় তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট, ৬২’র শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান, ৭০’র নির্বাচন,৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি কারারুদ্ধ হন।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হলে এর প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন তিনি। এরই ফলস্রুতিতে তৎকালীন সরকার তাঁকে ময়মনসিংহ জেলা কারাগারে বিনা বিচারে ৯ মাস কারারুদ্ধ করে রাখেন। আজীবন সংগ্রামী সাবেক ন্যাপ নেতা আব্দুর রশীদ তার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল (অবঃ) আতাউল গণি ওসমানী, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ ও বিপ্লবী রবি নিয়োগী সহ দেশ বরেণ্য বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের সান্নিধ্য লাভ করেন।
তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বাকশালের শেরপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ছিলেন সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রবক্তা আব্দুর রশীদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আল সামস ও জামায়াত-শিবির এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সারাজীবন আন্দোলন করে গেছেন। বিশেষ করে শেরপুরের কুখ্যাত আল বদর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দন্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই প্রতিবাদী ভুমিকা পালন করেন এবং যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানকে সামাজিকভাবে বয়কট করে শেরপুরে এক অন্যন্য নজীর স্থাপন করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শেরপুর জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
তিনি ৮৪ বছর বয়সে বার্ধক্য জনিত কারণে ২০১৪ সালের ৫ জুন ভোররাত সাড়ে তিনটায় শেরপুর টাউনের গৃদানারায়নপুরের নিজস্ব বাসভবনে ইন্তেকাল করেন