ঢাকা ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo গাজীপুরে বিসিএস আনসার কর্মকর্তা ও রিক্রুট সিপাহিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত Logo ময়মনসিংহের ভালুকায় দলিল লেখক সমিতির সভাপতি-রাব্বানী ,সম্পাদক-আমির হোসেন। Logo ঢাকায় শিক্ষা ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে লক্ষীপুরে শিক্ষকদের মানববন্ধন Logo ময়মনসিংহ টু ত্রিশাল অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সার দাপট… Logo শ্রেণি পাঠদানে প্রাথমিক শিক্ষায় পাঠ পরিকল্পনার অপরিহার্যতা Logo বাগমারায় শাহ সিমেন্টের পক্ষ থেকে নির্মাণ সাথী প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত Logo প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্কের গুরুত্ব Logo শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে সমাবেশ প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo হারিয়ে যাওয়া শিশু সাদিককে পাঠানো হচ্ছে রাজশাহী বেবী হোমে  Logo শ্রীমঙ্গলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ

বিরামপুরে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অবহেলার কারণে শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা

বিরামপুরে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অবহেলার কারণে শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা

ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর(দিনাজপুর)প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:৪০:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩ ৪৫ বার পড়া হয়েছে

ইব্রাহীম মিঞা
বিরামপুর(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এখন যেন মূর্তিমান আতঙ্ক। অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় বেপরোয়া তিনি।

বুধবার (৮ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের সাগাই হাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ ২ জন শিক্ষক এবং ৩য়,৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীসহ ৯ জন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত যদিও বার্ষিক পরীক্ষার ১ সপ্তাহ বাকি।

দ্বিতল ভবনের কয়েকটি শ্রেণী কক্ষ খোলা হয়নি একবারো,এমন অবস্থা হয়ার কারণ জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে স্থাপিত হয়।

একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষকসহ মোট ২ জন শিক্ষকের দ্বারা বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে ২০২১ ইং পর্যন্ত।

শিক্ষক সংখ্যা কম থাকায় বিদ্যালয়টিতে ছাত্র- ছাত্রী কম হয়,এমন অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলাম বলেন আমি অনেকবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগমকে শিক্ষক দেওয়ার বিষয়ে বললে তিনি বিষয়টি আমলে নেয়নি।

আমি প্রধান শিক্ষক হয়ে একাই অফিসের কার্যক্রম চালাবো নাকি শ্রেণী কক্ষে গিয়ে ক্লাস নিব নিলেও একসাথে কয় শ্রেণীর ক্লাস নিব যেখানে আমিসহ শিক্ষক ২ জন।

আমি অসুস্থ হলে বা কোন কারনে ছুটিতে থাকলে একজন সহকারী শিক্ষক কিভাবে একাই প্রতিষ্ঠান চালাবে।

এভাবেই এ এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের এবং অভিভাবকদের অনিহা চলে আসায় ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায় ৪র্থ শ্রেণীতে কোন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত নেই, শিক্ষক পাঁচ জনের মধ্যে একজন ছুটিতে আছেন উপস্থিত আছেন তিন জন।

একজন সহকারী শিক্ষক উপস্থিত না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাপলা পারভীন জানান, সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ দেলোয়ারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন তার মনমতো এবং চলেও যান তার মনমতো এবিষয়ে কিছু বললে তিনি অত্যন্ত বাজে ব্যাবহার করেন। তার এমন ব্যাবহারের কারনেই ৪র্থ শ্রেণীতে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত কম হয়।

এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগমকে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বলে জানিয়েছেন হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা।

গত দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার ফি নেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফি গ্রহণ করা হয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগমকে জানালে পরীক্ষার ফি গ্রহণ করার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় পরবর্তীতে অনেক বিদ্যালয় পরীক্ষার ফি ছাত্র-ছাত্রীদের ফেরত দেয়।

বিদ্যালয়ে স্লিপের টাকা,কাজের তদারকি না করায় অনেক বিদ্যালয়ের পরিবেশ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

বিরামপুর উপজেলার অনেক ইউনিয়নে এক এলাকায় একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রী মনিটরিং বোর্ডে বেশি দেখানো হলেও বাস্তবে উপস্থিতি কম।

কিভাবে ৮ বছর ধরে ২ জন শিক্ষকের মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় পরিচালিত হয়। সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকাকে না মেনে মন মত চলাফেরা এবং বিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে ফোনে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগম বলেন ওই বিদ্যালয়টিতে ডেপুটেশনে ঐদুইজনই শিক্ষক রয়েছেন। চাহিদা দিয়ে আবেদন করলে আমরা শিক্ষক দিব।

সহকারী শিক্ষকের মন মত চলার বিষয়ে তিনি বলেন উনার বিষয়ে আমি জানি,প্রধান শিক্ষিকা লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টা আমি দেখব।

বিরামপুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার মান ভালো না হওয়ার বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অবহেলাকে দায়ী করেন এলাকার সচেতন মহল।

সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকলেও পড়ালেখার মান ভালো না পাওয়ায় কিন্ডার গার্ডেন স্কুলমুখী হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

এতে করে গরীব অসহায় পরিবারের অনেক ছাত্র-ছাত্রী প্রাথমিক শিক্ষা হতে ঝরে পড়ছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আসূদৃষ্টি কামনা করেন সুধীসমাজ।

Translate »

বিরামপুরে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অবহেলার কারণে শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা

বিরামপুরে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অবহেলার কারণে শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা

আপডেট সময় : ০৭:৪০:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩

ইব্রাহীম মিঞা
বিরামপুর(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এখন যেন মূর্তিমান আতঙ্ক। অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় বেপরোয়া তিনি।

বুধবার (৮ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের সাগাই হাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ ২ জন শিক্ষক এবং ৩য়,৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীসহ ৯ জন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত যদিও বার্ষিক পরীক্ষার ১ সপ্তাহ বাকি।

দ্বিতল ভবনের কয়েকটি শ্রেণী কক্ষ খোলা হয়নি একবারো,এমন অবস্থা হয়ার কারণ জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে স্থাপিত হয়।

একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষকসহ মোট ২ জন শিক্ষকের দ্বারা বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে ২০২১ ইং পর্যন্ত।

শিক্ষক সংখ্যা কম থাকায় বিদ্যালয়টিতে ছাত্র- ছাত্রী কম হয়,এমন অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলাম বলেন আমি অনেকবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগমকে শিক্ষক দেওয়ার বিষয়ে বললে তিনি বিষয়টি আমলে নেয়নি।

আমি প্রধান শিক্ষক হয়ে একাই অফিসের কার্যক্রম চালাবো নাকি শ্রেণী কক্ষে গিয়ে ক্লাস নিব নিলেও একসাথে কয় শ্রেণীর ক্লাস নিব যেখানে আমিসহ শিক্ষক ২ জন।

আমি অসুস্থ হলে বা কোন কারনে ছুটিতে থাকলে একজন সহকারী শিক্ষক কিভাবে একাই প্রতিষ্ঠান চালাবে।

এভাবেই এ এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের এবং অভিভাবকদের অনিহা চলে আসায় ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায় ৪র্থ শ্রেণীতে কোন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত নেই, শিক্ষক পাঁচ জনের মধ্যে একজন ছুটিতে আছেন উপস্থিত আছেন তিন জন।

একজন সহকারী শিক্ষক উপস্থিত না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাপলা পারভীন জানান, সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ দেলোয়ারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন তার মনমতো এবং চলেও যান তার মনমতো এবিষয়ে কিছু বললে তিনি অত্যন্ত বাজে ব্যাবহার করেন। তার এমন ব্যাবহারের কারনেই ৪র্থ শ্রেণীতে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত কম হয়।

এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগমকে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বলে জানিয়েছেন হরিহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা।

গত দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার ফি নেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফি গ্রহণ করা হয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগমকে জানালে পরীক্ষার ফি গ্রহণ করার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় পরবর্তীতে অনেক বিদ্যালয় পরীক্ষার ফি ছাত্র-ছাত্রীদের ফেরত দেয়।

বিদ্যালয়ে স্লিপের টাকা,কাজের তদারকি না করায় অনেক বিদ্যালয়ের পরিবেশ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

বিরামপুর উপজেলার অনেক ইউনিয়নে এক এলাকায় একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রী মনিটরিং বোর্ডে বেশি দেখানো হলেও বাস্তবে উপস্থিতি কম।

কিভাবে ৮ বছর ধরে ২ জন শিক্ষকের মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় পরিচালিত হয়। সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকাকে না মেনে মন মত চলাফেরা এবং বিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে ফোনে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা বেগম বলেন ওই বিদ্যালয়টিতে ডেপুটেশনে ঐদুইজনই শিক্ষক রয়েছেন। চাহিদা দিয়ে আবেদন করলে আমরা শিক্ষক দিব।

সহকারী শিক্ষকের মন মত চলার বিষয়ে তিনি বলেন উনার বিষয়ে আমি জানি,প্রধান শিক্ষিকা লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টা আমি দেখব।

বিরামপুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার মান ভালো না হওয়ার বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অবহেলাকে দায়ী করেন এলাকার সচেতন মহল।

সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকলেও পড়ালেখার মান ভালো না পাওয়ায় কিন্ডার গার্ডেন স্কুলমুখী হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

এতে করে গরীব অসহায় পরিবারের অনেক ছাত্র-ছাত্রী প্রাথমিক শিক্ষা হতে ঝরে পড়ছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আসূদৃষ্টি কামনা করেন সুধীসমাজ।