বাংলাদেশের প্রায় সকল খাতেই দুর্নীতি আর অনিয়মের ছড়াছড়ি। কর্তৃপক্ষ যেনো দেখেও দেখে না, শুনেও শুনে না। সাধারণ জনগণের কোনো গুরুত্বই তাদের কাছে নেই। অবশ্য মোড়লদের বেলায় তারা যেনো সাধু সন্ন্যাসী। অসংখ্য অনিয়মের মধ্যে অন্তত এবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস নিয়ে সংসদে উঠেছে নানান অভিযোগ। তবে ইমিগ্রেশনের নামে অসহ্য হয়রানির কথা বিস্তারিত বলেনি কেউ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সেবা নিয়ে জাতীয় সংসদে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা (এমপি)। তাঁদের অভিযোগ, বিমানের টিকিট পাওয়া যায় না, কিন্তু সিট খালি থাকে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ বিমান অর্ডার, ১৯৭২ পুনর্বহাল ও সংশোধন’ বিলের ওপর আলোচনায় এসব অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের এমপিরা। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর আমলে করা বাংলাদেশ বিমান অর্ডার পুনর্বহাল করতে বিলটি পাস হয় গতকাল।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার বলেন, ‘বিমানবন্দরে মিষ্টি খেতে টাকা চাওয়ার অভিযোগ আসছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মিষ্টি খাওয়ার টাকা দিতে দিতে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে যাত্রী বিমানে উঠেছেন, এ রকম নজির ঘটেছে। এটা তো হতে পারে না।’
দলটির আরেক সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, বিমানে সেবার মান তেমন নেই। অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বিমানের সেবার মান অনেক অনুন্নত।
বিদেশে বিমানে লাগেজ পার্টি নেই উল্লেখ করে রওশন আরা বলেন, ‘সেখানে নিরাপত্তা আছে। লাগেজ আসামাত্র পাওয়া যায়, কখনো কোনো কিছু হারানোর শঙ্কা নেই। কিন্তু আমাদের দেশে লাগেজ পার্টি...। কত কষ্ট করে মানুষ বিদেশ থেকে জিনিস নিয়ে আসে, কিন্তু কেটে কেটে নিয়ে যায়। লাগেজ পার্টি বন্ধ করতে হবে। কঠোর আইন করে বন্ধ করতে হবে।’
বিমানের অনিয়ম, অভিযোগ নিয়ে বলে শেষ করা যাবে না উল্লেখ করে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, ‘মন্ত্রী সজ্জন ব্যক্তি। আমি মনে করেছিলাম, তিনি বিমানের ভালো ইমেজ নিয়ে আসবেন। কোনো সরকারের সময় বিমানকে ভালো অবস্থানে দেখিনি।’
বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, একসময় ছিল, বিমানের টিকিট পাওয়া যেত না। এখন সেই অবস্থা নেই। এখন অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হয়। বিমান এখন লাভে চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
গতকাল পাশ হওয়া আইনটি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইনটি অনুমোদিত হলে সরকারি কোম্পানি হিসাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের পরিচালনাসহ পরিচালনা পর্ষদ অবলুপ্তকরণ, নতুন পরিচালক নিয়োগ করা, ব্যবস্থাপনা এজেপি চুক্তি অবসায়ন নিশ্চিত করা হবে।
সর্বোপরি বলা বাহুল্য, বিমানের নানাবিধ অনিয়ম ও হয়রানি সাধারণ মানুষের সহ্যের বাইরে। বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী জনগণ যখন দেশে ফিরে আসেন। তখন তাদেরকে যে পরিমাণ হয়রানি করা হয়, তা বলার ভাষা নেই। এছাড়াও ইমিগ্রেশনের নামে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনি দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার মতো বিড়ম্বনা পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই। তাই বিমান খাতে সকল অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।