শুনানি শেষে তিনি আদালতের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহি বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের আগেই আমি ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি, দোয়া চেয়েছি। এটাও একটা আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। আমি এর জন্য আদালতকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করেছি। তারা আমাকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে যে, পরবর্তী সময়ে যাতে এ রকম না হয়। আমি এটা মেনে চলব।’
মাহি আরও বলেন, ‘উনারা (নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি) আসলে সবার জন্যই সমান। এই আসনের বর্তমান যিনি এমপি, তাকেও শোকজ করা হয়েছিল।’
কোন প্রতীকে নির্বাচনে লড়বেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহি বলেন, ‘পছন্দের প্রতীক এখনো বলতে চাই না। প্রতীক বরাদ্দ হবে আগামীকাল। কালই ঠিক হবে আমি কোন প্রতীকটা পাচ্ছি। এর পরেই প্রচারণা। প্রচারণা তো সেই রকমভাবেই করতে হবে। বড় বড় দুটি উপজেলা। মাঠপর্যায়ে আমার অবস্থান খুব ভালো। আপনারা খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।’
ভোটের মাঠে এসে কোনো বাধা পাওয়া যাচ্ছে কি না, জানতে চাইলে ঢাকাই সিনেমার এই নায়িকা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাকে কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হয়নি। সরে যাওয়ার কথাও বলা হয়নি। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, বিষয়টা আসলে তখন বোঝা যাবে। সরাসরি এখনো কোনো হুমকি আসেনি। প্রচারণার মাঠে গিয়ে আসলে কতটুকু প্রবলেম ফেইস করি সেটা আপনাদের সবাইকে (সাংবাদিকদের) জানাব এবং সহযোগিতা চাইব। যদি দেখি যে আমার কর্মীরা রিস্ক ফিল করছে, তাহলে অবশ্যই আপনারা সাপোর্ট করবেন এবং সেটা দেশবাসীকে জানাবেন।’
শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে মাহি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি, শেষ পর্যন্ত লড়ব।’
এর আগে শোকজ নোটিশের জবাব দিতে বেলা সাড়ে ১১টায় আদালতে আসেন মাহিয়া মাহি। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত শুনানি চলে। শুনানিতে আদালত মাহির বক্তব্যে সন্তোষ প্রকাশ করে তাঁকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। তবে তাঁকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়।
আদালতের পেশকার মো. সাহাবুদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদালতে মাহিয়া মাহি তাঁর ভুল স্বীকার করে বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন। আদালত তাঁর জবাবে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে আদালত তাঁকে সতর্ক করেছেন, যেন ভবিষ্যতে তিনি আচরণবিধি মেনে চলেন।’
গত বৃহস্পতিবার গোদাগাড়ীর চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নে গিয়ে গণসংযোগ করেন। বিষয়টি নজরে এলে পরদিন শুক্রবার মাহিয়া মাহিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে তাঁকে সশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী আদালতে গিয়ে জবাব দিলেন তিনি।