ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ভোলার সাবেক এমপি মুকুলের বিরুদ্ধে মামলা করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা Logo ময়মনসিংহের সিএনজি অটোরিকশা চোরচক্রের ৬ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার… Logo গাজীপুরে বিসিএস আনসার কর্মকর্তা ও রিক্রুট সিপাহিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত Logo ময়মনসিংহের ভালুকায় দলিল লেখক সমিতির সভাপতি-রাব্বানী ,সম্পাদক-আমির হোসেন। Logo ঢাকায় শিক্ষা ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে লক্ষীপুরে শিক্ষকদের মানববন্ধন Logo ময়মনসিংহ টু ত্রিশাল অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সার দাপট… Logo শ্রেণি পাঠদানে প্রাথমিক শিক্ষায় পাঠ পরিকল্পনার অপরিহার্যতা Logo বাগমারায় শাহ সিমেন্টের পক্ষ থেকে নির্মাণ সাথী প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত Logo প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্কের গুরুত্ব Logo শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে সমাবেশ প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

নাটোরে ৯৭ জনের ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতিবন্ধী জুলেখা জলি

জেলা (নাটোর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৩:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩ ৬৩ বার পড়া হয়েছে

জেলা (নাটোর) প্রতিনিধিঃ

নাটোরের সদর উপজেলার বারঘরিয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী নারী জুলেখা আক্তার জলি। জন্ম থেকে দুই পায়ের সমস্যা থাকায় চলাফেরা করেন হুইলচেয়ারে।

এলাকায় কথিত আছে এক প্রতিবন্ধী সংস্থার মাধ্যমে জুলেখা ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন দুইবার। সেখানে তার পরিচিত কোম্পানিতে ‘মেডিকেল কেয়ার ওয়ার্কার’ হিসেবে লোক পাঠানোর সুযোগ রয়েছে তার।

জুলেখার মাধ্যমে ইংল্যান্ড যেতে প্রয়োজন ১৮ লাখ টাকা। তবে প্রথমে ৫ লাখ টাকা জুলেখার কাছে জমা দিতে হবে আর বাকি টাকা দিতে হবে লন্ডনে যাওয়ার পরে। লন্ডনে সেই কাজের জন্য স্বাক্ষর জানারও প্রয়োজন নেই।

জুলেখা ও এই চক্রের এমন প্রচারণার ফাঁদে পা দিয়ে অটোরিকশাচালক থেকে শুরু করে শিক্ষিত তরুণরাও হয়েছেন সর্বস্বান্ত।

অভিযোগ উঠেছে নাটোর ও রাজশাহীর ৫০ জন ব্যক্তিসহ সারাদেশের ৯৭ জনকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতিবন্ধী জুলেখা আক্তার জুলি ও তার চক্র‌।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে এ চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন চক্রের মাস্টারমাইন্ড জুলেখা আক্তার জলি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পর সবাইকে একসঙ্গে ঢাকায় নিয়ে যায় চক্রটি। সেখানে ফ্লাইটের তারিখ বলে আর কোনো খোঁজখবর না নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তারা।

ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারে তারা প্রতারিত হয়েছেন গ্রামে এসে টাকা ফেরত চাইলে, নানা রকম তালবাহানা করতে থাকেন জুলেখা জলি। পরে স্থানীয় গ্রাম প্রধানদের শালিশেও হয় না কোন সুরাহা।

এদিকে লন্ডনে যাওয়ার জন্য ব্যাংক লোন, সুদের টাকা, ধারদেনা ও শেষ সম্বল অটোরিক্সা বেঁচে টাকা দেওয়া ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ঋণের বোঝা বাড়ছে চক্রবৃদ্ধি হারে। অনেকে ঋণের ফাঁদে আটকে স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঘর বাড়ি ছেড়ে।

প্রতারণার শিকার সদর উপজেলার কাফুরিয়া পন্মাতপুর গ্রামের তৌহিদুল গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে লন্ডন নিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রতিবন্ধী জলি। এর জন্য তাকে ২ লাখ৫০ টাকা দিতে হবে বলে জানায়।

পরে ১ লাখ টাকা লিজের ওপর (সুদ) ও ১লাখ ৫০ হাজার টাকা গরু বিক্রি ও কিস্তি তুলে মোট ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা গুছিয়ে তাকে দেই।

এরপর লন্ডন নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আরও ৩০ হাজার টাকা খরচ করিয়ে সর্বস্বান্ত হয়।তিনি বলেন, লিজের ওপর নেওয়া টাকা বাড়তে শুরু করেছে।

কিস্তির টাকাও দিতে পারি না। পাওনাদারদের জন্য আমি বাড়িতে থাকতে পারে না, পালিয়ে থাকে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, খুব কষ্টে দিন পার করছি।চাকরি ছেড়ে কর্মহীন হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই, সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।

বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর গ্রামের ভুক্তভোগী রনি ইসলাম বলেন, কেয়ার ভিসায় লন্ডনে নিয়ে গিয়ে মাসে ৩ লাখ টাকা বেতন দেওয়ার কথা বললে আমি ও আমার ভাইয়ের জন্য ৮ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে লোন উঠিয়ে দেই। পরে আমাদের দেখে আমার এক মামাও যাওয়ার জন্য আড়াই লাখ টাকা জমা দেয়।

প্রথমে আমার যাওয়ার কথা হওয়ায় ৩০ হাজার টাকার মার্কেট ও করি। পরে ঢাকা নিয়ে গিয়ে ৭ দিন রেখে ফ্লাইটের ডেট বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

পরে ফোন করে আমাদের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে বাড়ি চলে আসতে বলে।

বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের মুখে শোনা যাচ্ছে জলির বড় বোন মিরা ঢাকা শহরে গার্মেন্টসে চাকরি করে।

সে ঢাকা শহরে দুইটা ফ্লাট কিনেছে, এটা কিভাবে কিনলো, ভুক্তভোগীরা বলেন জলি যখন টাকা নেই তার বড় বোন দুলাভাই, তার ভাই পিন্টু সবাই মিলে এক সাথে থেকে টাকা নেয়।হয়তবা আমাদের টাকা দিয়ে ঢাকা শহরে ফ্লাট কিনেছে।

সদর উপজেলার বারঘরিয়া গ্রামের টগর আলী বলেন, আমাকে বলেছে সেখানে মাসে সাড়ে তিন লাখ টাকা বেতন।

মাঠে ঘাটে কাজকর্ম করে খাই বিদেশে গেলে সহজেই বড়লোক হতে পারব, এই চিন্তায় গরু বেঁচে লোন নিয়ে তাদেরকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। দুই বছর হয়ে গেছে টাকা দেওয়া।

বিভিন্ন সময় নিয়ে যাওয়ার কথা বললে জুলেখা বলে, আমার বস পালাইছে, এখন নিয়ে যেতে পারব না। টাকা ফেরত চাইলে বলে- কাগজপাতি এখনো রেডি হয়নি, কাজ চলছে।

এ ঘটনায় সদর উপজেলার কাফুরিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী আবু বকর বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তিনিসহ ৯৭ জন ব্যক্তিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

এদিকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি শিকার করে অভিযুক্ত জুলেখা আক্তার জলি বলেন, এলাকার গরীব-দুঃখী মানুষদের উন্নয়ন করতে চেয়েছিলাম।

আমার বগুড়ার স্যার এস. শাহাজাদা প্রথমে আমাকে লন্ডনে লোক নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। পরে আমি ইংল্যান্ডে যাওয়ার কথা এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করলে অনেকেই যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

পরে সব প্রক্রিয়া শেষে যাওয়ার সময় হলে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তিনি বলেন, তাকে খুঁজে বের করে গরিব-দুঃখী সব মানুষের টাকা দিয়ে দেব।

এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জামাল উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগীদের করা মামলায় গত রাতে অভিযুক্ত জুলেখা আক্তার জুলিকে সিংড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নাটোরের সিংড়া থেকে জুলেখাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে একই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Translate »

নাটোরে ৯৭ জনের ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতিবন্ধী জুলেখা জলি

আপডেট সময় : ০৯:৫৩:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩

জেলা (নাটোর) প্রতিনিধিঃ

নাটোরের সদর উপজেলার বারঘরিয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী নারী জুলেখা আক্তার জলি। জন্ম থেকে দুই পায়ের সমস্যা থাকায় চলাফেরা করেন হুইলচেয়ারে।

এলাকায় কথিত আছে এক প্রতিবন্ধী সংস্থার মাধ্যমে জুলেখা ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন দুইবার। সেখানে তার পরিচিত কোম্পানিতে ‘মেডিকেল কেয়ার ওয়ার্কার’ হিসেবে লোক পাঠানোর সুযোগ রয়েছে তার।

জুলেখার মাধ্যমে ইংল্যান্ড যেতে প্রয়োজন ১৮ লাখ টাকা। তবে প্রথমে ৫ লাখ টাকা জুলেখার কাছে জমা দিতে হবে আর বাকি টাকা দিতে হবে লন্ডনে যাওয়ার পরে। লন্ডনে সেই কাজের জন্য স্বাক্ষর জানারও প্রয়োজন নেই।

জুলেখা ও এই চক্রের এমন প্রচারণার ফাঁদে পা দিয়ে অটোরিকশাচালক থেকে শুরু করে শিক্ষিত তরুণরাও হয়েছেন সর্বস্বান্ত।

অভিযোগ উঠেছে নাটোর ও রাজশাহীর ৫০ জন ব্যক্তিসহ সারাদেশের ৯৭ জনকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতিবন্ধী জুলেখা আক্তার জুলি ও তার চক্র‌।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে এ চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন চক্রের মাস্টারমাইন্ড জুলেখা আক্তার জলি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পর সবাইকে একসঙ্গে ঢাকায় নিয়ে যায় চক্রটি। সেখানে ফ্লাইটের তারিখ বলে আর কোনো খোঁজখবর না নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তারা।

ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারে তারা প্রতারিত হয়েছেন গ্রামে এসে টাকা ফেরত চাইলে, নানা রকম তালবাহানা করতে থাকেন জুলেখা জলি। পরে স্থানীয় গ্রাম প্রধানদের শালিশেও হয় না কোন সুরাহা।

এদিকে লন্ডনে যাওয়ার জন্য ব্যাংক লোন, সুদের টাকা, ধারদেনা ও শেষ সম্বল অটোরিক্সা বেঁচে টাকা দেওয়া ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ঋণের বোঝা বাড়ছে চক্রবৃদ্ধি হারে। অনেকে ঋণের ফাঁদে আটকে স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঘর বাড়ি ছেড়ে।

প্রতারণার শিকার সদর উপজেলার কাফুরিয়া পন্মাতপুর গ্রামের তৌহিদুল গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে লন্ডন নিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রতিবন্ধী জলি। এর জন্য তাকে ২ লাখ৫০ টাকা দিতে হবে বলে জানায়।

পরে ১ লাখ টাকা লিজের ওপর (সুদ) ও ১লাখ ৫০ হাজার টাকা গরু বিক্রি ও কিস্তি তুলে মোট ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা গুছিয়ে তাকে দেই।

এরপর লন্ডন নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আরও ৩০ হাজার টাকা খরচ করিয়ে সর্বস্বান্ত হয়।তিনি বলেন, লিজের ওপর নেওয়া টাকা বাড়তে শুরু করেছে।

কিস্তির টাকাও দিতে পারি না। পাওনাদারদের জন্য আমি বাড়িতে থাকতে পারে না, পালিয়ে থাকে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, খুব কষ্টে দিন পার করছি।চাকরি ছেড়ে কর্মহীন হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই, সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।

বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর গ্রামের ভুক্তভোগী রনি ইসলাম বলেন, কেয়ার ভিসায় লন্ডনে নিয়ে গিয়ে মাসে ৩ লাখ টাকা বেতন দেওয়ার কথা বললে আমি ও আমার ভাইয়ের জন্য ৮ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে লোন উঠিয়ে দেই। পরে আমাদের দেখে আমার এক মামাও যাওয়ার জন্য আড়াই লাখ টাকা জমা দেয়।

প্রথমে আমার যাওয়ার কথা হওয়ায় ৩০ হাজার টাকার মার্কেট ও করি। পরে ঢাকা নিয়ে গিয়ে ৭ দিন রেখে ফ্লাইটের ডেট বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

পরে ফোন করে আমাদের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে বাড়ি চলে আসতে বলে।

বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের মুখে শোনা যাচ্ছে জলির বড় বোন মিরা ঢাকা শহরে গার্মেন্টসে চাকরি করে।

সে ঢাকা শহরে দুইটা ফ্লাট কিনেছে, এটা কিভাবে কিনলো, ভুক্তভোগীরা বলেন জলি যখন টাকা নেই তার বড় বোন দুলাভাই, তার ভাই পিন্টু সবাই মিলে এক সাথে থেকে টাকা নেয়।হয়তবা আমাদের টাকা দিয়ে ঢাকা শহরে ফ্লাট কিনেছে।

সদর উপজেলার বারঘরিয়া গ্রামের টগর আলী বলেন, আমাকে বলেছে সেখানে মাসে সাড়ে তিন লাখ টাকা বেতন।

মাঠে ঘাটে কাজকর্ম করে খাই বিদেশে গেলে সহজেই বড়লোক হতে পারব, এই চিন্তায় গরু বেঁচে লোন নিয়ে তাদেরকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। দুই বছর হয়ে গেছে টাকা দেওয়া।

বিভিন্ন সময় নিয়ে যাওয়ার কথা বললে জুলেখা বলে, আমার বস পালাইছে, এখন নিয়ে যেতে পারব না। টাকা ফেরত চাইলে বলে- কাগজপাতি এখনো রেডি হয়নি, কাজ চলছে।

এ ঘটনায় সদর উপজেলার কাফুরিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী আবু বকর বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তিনিসহ ৯৭ জন ব্যক্তিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

এদিকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি শিকার করে অভিযুক্ত জুলেখা আক্তার জলি বলেন, এলাকার গরীব-দুঃখী মানুষদের উন্নয়ন করতে চেয়েছিলাম।

আমার বগুড়ার স্যার এস. শাহাজাদা প্রথমে আমাকে লন্ডনে লোক নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। পরে আমি ইংল্যান্ডে যাওয়ার কথা এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করলে অনেকেই যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

পরে সব প্রক্রিয়া শেষে যাওয়ার সময় হলে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তিনি বলেন, তাকে খুঁজে বের করে গরিব-দুঃখী সব মানুষের টাকা দিয়ে দেব।

এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জামাল উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগীদের করা মামলায় গত রাতে অভিযুক্ত জুলেখা আক্তার জুলিকে সিংড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নাটোরের সিংড়া থেকে জুলেখাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে একই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।