ঢাকা ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পল্টনে মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষে গাজীপুরে প্রস্তুতি সভা। Logo ।।ভক্ত আশেকানদের জন্য উন্মুক্ত করা হলো ফটিকছড়ির বাবা ভান্ডারীর রওজা।। Logo কালিয়াকৈরে পবিত্র ঈদ-ই মিলাদুন্নবী পালিত Logo লক্ষীপুরের রায়পুরে প্রাক্তন ছাত্র ও বন্ধু মহলের উদ্যোগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ২ শতাধিক কৃষকের মাঝে ধানের চারা বিতরন Logo চট্টগ্রাম বোয়াল খালির হোরার বাগ গ্রামে জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নী(সা:) মাহফিল সম্পন্ন Logo লালমোহনে রশিদ দিয়ে চাঁদাবাজি ৬ জন গ্রেফতার Logo নার্সদের নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে ত্রিশালে মানববন্ধন Logo গফরগাঁও য়ে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। Logo লক্ষীপুরের রায়পুরে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা Logo বাগমারায় হয়রানিমূলক মামলা ও হুমকির প্রতিবাদে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন 

নড়াইলে উৎপাদন ব্যয় উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১০:২৩:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

উজ্জ্বল রায়
নড়াইল প্রতিনিধিঃ

নড়াইলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে আমন ধান। সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও উৎপাদন ব্যয় উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।

এদিকে ফলন ভালো হয়েছে দাবি করে কৃষি বিভাগ বলছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবং কৃষক ন্যায্য মূল্য পেলে আগামীতে আমান চাষ আরও বাড়বে।

দৈনিক বর্তমান সংবাদ এর প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় কে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ বছর জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৪২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪২৩ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশ জমির ধান কর্তন হয়েছে।

সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, দিগন্ত বিস্তৃত মাঠজুড়ে আমন ধানের খেত সবুজ থেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। কৃষকরাও ফসল ঘরে তুলতে দিন-রাত এক করে কাজ করছে। কেউ ধান কাটছে, কেউ আঁটি বাঁধছে। কেউ কেউ সেই ধান মাথায় নিয়ে খেত থেকে বাড়ি যাচ্ছে। আবার কেউ করছে মাড়াইয়ের কাজ। সকাল থেকে দিনভর এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। তবে কৃষকের মুখে নেই হাসি। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও সার, কীটনাশক, ধান কাটা শ্রমিকসহ অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। ফলে ধানের দাম না বাড়লে লাভ তো দূরে থাক এই দামে উৎপাদন খরচ উঠবে কি না তা নিয়ে এখন শঙ্কায় কৃষক।

সদর উপজেলার উজিরপুর এলাকার আমন চাষি সমীর সিকদার বলেন, ধানের ফলন একেবারে খারাপ না। ফলন ভালোই। কিন্তু সার, ওষুধ দিয়ে যে খরচ পড়ে তাতে তাদের মোটেই লাভ থাকে না। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। দাম বাড়ানো উচিত। দাম না বাড়ালি কৃষক বাঁচবে না।

অজিত বিশ্বাস জানান, তারা যে দাম পাচ্ছে সে দামের তুলনায় যে খরচ হয় সে খরচের পয়সা তাদের বাঁচে না। এ বছর পোকার (কারেন্ট পোকা) কারণে বিঘা প্রতি ধানের ফলনও কম হয়ছে। তারপর সার-মাটিতে যে খরচ তা চালান একটুও মেলে না। চাষি মানুষ, চাষ করতে হয়, তাই করে যাচ্ছেন।

কার্তিক দাসসহ জেলার আরো কয়েকজন কৃষক জানান, সব কিছুর যে দাম তাতে ধানের দাম ১৫শ টাকার নিচে হলে কৃষকের লস। যেভাবে খরচ হয়, তাতে কৃষকের বেঁচে থাকা সম্ভব না। তারপরও নিজেদের জমি, চাষ না করে কি করবেন। না খেয়ে তো আর মরা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে লস হলেও চাষ করা লাগে।

এদিকে আমনের ফলন ভালো হয়েছে দাবি করে নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.রোকনুজ্জামান দৈনিক বর্তমান সংবাদ কে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা আগ্রহের সাথে রোপা আমন চাষ করেছে।

তুলনামূলক রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তবে কৃষকদের একটি আশঙ্কার জায়গা হচ্ছে ধানের দাম।

প্রতিটা স্তরে যে উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং কৃষক যদি যথাযথ মূল্য পায় তাহলে নড়াইলসহ সারাদেশে রোপা আমনের আবাদ বাড়বে।

একইসঙ্গে উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে কৃষক আরও আগ্রহী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।

Translate »

নড়াইলে উৎপাদন ব্যয় উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

আপডেট সময় : ১০:২৩:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৩

উজ্জ্বল রায়
নড়াইল প্রতিনিধিঃ

নড়াইলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে আমন ধান। সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও উৎপাদন ব্যয় উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।

এদিকে ফলন ভালো হয়েছে দাবি করে কৃষি বিভাগ বলছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবং কৃষক ন্যায্য মূল্য পেলে আগামীতে আমান চাষ আরও বাড়বে।

দৈনিক বর্তমান সংবাদ এর প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় কে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ বছর জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৪২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪২৩ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশ জমির ধান কর্তন হয়েছে।

সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, দিগন্ত বিস্তৃত মাঠজুড়ে আমন ধানের খেত সবুজ থেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। কৃষকরাও ফসল ঘরে তুলতে দিন-রাত এক করে কাজ করছে। কেউ ধান কাটছে, কেউ আঁটি বাঁধছে। কেউ কেউ সেই ধান মাথায় নিয়ে খেত থেকে বাড়ি যাচ্ছে। আবার কেউ করছে মাড়াইয়ের কাজ। সকাল থেকে দিনভর এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। তবে কৃষকের মুখে নেই হাসি। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও সার, কীটনাশক, ধান কাটা শ্রমিকসহ অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। ফলে ধানের দাম না বাড়লে লাভ তো দূরে থাক এই দামে উৎপাদন খরচ উঠবে কি না তা নিয়ে এখন শঙ্কায় কৃষক।

সদর উপজেলার উজিরপুর এলাকার আমন চাষি সমীর সিকদার বলেন, ধানের ফলন একেবারে খারাপ না। ফলন ভালোই। কিন্তু সার, ওষুধ দিয়ে যে খরচ পড়ে তাতে তাদের মোটেই লাভ থাকে না। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। দাম বাড়ানো উচিত। দাম না বাড়ালি কৃষক বাঁচবে না।

অজিত বিশ্বাস জানান, তারা যে দাম পাচ্ছে সে দামের তুলনায় যে খরচ হয় সে খরচের পয়সা তাদের বাঁচে না। এ বছর পোকার (কারেন্ট পোকা) কারণে বিঘা প্রতি ধানের ফলনও কম হয়ছে। তারপর সার-মাটিতে যে খরচ তা চালান একটুও মেলে না। চাষি মানুষ, চাষ করতে হয়, তাই করে যাচ্ছেন।

কার্তিক দাসসহ জেলার আরো কয়েকজন কৃষক জানান, সব কিছুর যে দাম তাতে ধানের দাম ১৫শ টাকার নিচে হলে কৃষকের লস। যেভাবে খরচ হয়, তাতে কৃষকের বেঁচে থাকা সম্ভব না। তারপরও নিজেদের জমি, চাষ না করে কি করবেন। না খেয়ে তো আর মরা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে লস হলেও চাষ করা লাগে।

এদিকে আমনের ফলন ভালো হয়েছে দাবি করে নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.রোকনুজ্জামান দৈনিক বর্তমান সংবাদ কে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা আগ্রহের সাথে রোপা আমন চাষ করেছে।

তুলনামূলক রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তবে কৃষকদের একটি আশঙ্কার জায়গা হচ্ছে ধানের দাম।

প্রতিটা স্তরে যে উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং কৃষক যদি যথাযথ মূল্য পায় তাহলে নড়াইলসহ সারাদেশে রোপা আমনের আবাদ বাড়বে।

একইসঙ্গে উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে কৃষক আরও আগ্রহী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।