ঢাকা ০৩:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পলাশবাড়ীতে ওয়ালটন ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ ও পুরস্কার বিতরণী Logo পলাশবাড়ীতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া Logo কটিয়াদীতে উপজেলা জামায়াতের কমিটি গঠন Logo শেরপুর জেলা শ্রীবরদীতে পানিতে ডুবে যমজ দুই শিশুর মৃত্যু ঘটনা ঘটে Logo শ্রীমঙ্গলের রেলওয়ে স্টেশনে কৃষকদলের মহা সমাবেশ Logo সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মাদক সেবনের দায়ে তিনজনের কারাদণ্ড। Logo কিশোরগঞ্জে রক্ত দিয়ে গোসল করবে বলে হুমকির অভিযোগ এক যুবকের বিরুদ্ধে Logo সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করেছে সরকার। Logo দ্বীন কায়েমের জন্য দৃড় প্রতিঙ্গা ছিল আসলাম হোসাইনের  Logo ভালুকায় যুবদলের কর্মী সামাবেশ ও সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত 

জীবন যুদ্ধে জয়ী আত্মবিশ্বাসী ওবায়দুরের কথা

হাজী কাউছার, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩ ২৬৭ বার পড়া হয়েছে

হাজী কাউছার
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের চুউরিয়া গ্রামের লোকাল ইলেকট্রিকশিয়ান বা মেকানিক হিসেবে পরিচিত জীবন সংগ্রামে হার না মানা মোঃ ওবায়দুর রহমান (৩৫)।

১৩ বছর ধরে নবীনগর পৌরসভার মাঝিকাড়াস্থ কনিকাড়া নৌকা ঘাটে (দোকানে) বৈদ্যুতিক মালামল মেরামত করে আসছেন তিনি।

বিশেষ করে ফ্যান, মটর, জেনারেটর মেরামত ও কয়েল বাঁধাইয়ের কাজ করে থাকেন। বর্তমানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নবীনগর পৌরসভাস্থ আলীয়াবাদ দক্ষিণ পাড়ায়। ৩ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক তিনি।

১০ বছর আগে বৈদ্যুতিক কাজ করতে গিয়ে ইলেকট্রিক শকে ডান হাত হারান তিনি। দীর্ঘ দিনের অমানুষিক কষ্টের পর যখন সেরে উঠে ক্ষত তখন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারি হিসেবে পরিবারের হাল ধরতে শুরু করেন ইলেকট্রিক কাজ দিয়ে।

অন্য কোন কাজ জানা না থাকায় ও পুজির অভাবে এক হাত দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। প্রথম দিকে এক হাত দিয়ে কাজ করতে কষ্ট হলেও অভিজ্ঞতা আর একনিষ্ঠ শ্রমে এখন তিনি আগের মতই নিখুঁত ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

হতাশাগ্রস্ত, বেকার মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন তিনি। তাকে দেখলে যেন মানুষের হতাশা কেটে যায়। কিছু একটা কর্মসংস্থান করে যেন বাঁচার তাগিদ খুঁজে পায় অন্যরা।

ওবায়দুর রহমান জানান, শক খাওয়ার পর হাতটা কাইট্টা লাইতে অইচে। অনেক দিন বেকার আছিলাম। কাম কাইজ করতাম পারছি না। অহন আল্লার রহমতে ভালা আছি।

পাশবর্তী হোটেল ব্যবসায়ী ফয়সাল মিয়া বলেন, মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর কাজ করেন ইলা (ওবায়দুর রহমান)।

রুবেল মিয়া নামে একজন বলেন, আমি তো প্রথমে উনাকে দেখে বিশ্বাসই করতে পারতেছিলাম যে উনি এক হাত দিয়ে ফ্যানের কয়েল বাঁধাই করতে পারবেন! পরে দাঁড়িয়ে থেকে উনার কাজ করতে দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।

আত্মবিশ্বাসী ওবায়দুর রহমানের এক হাত দিয়ে কাজ করার দৃশ্য স্বাভাবিক মনে হলেও একদিকে অনেকের বিশ্বাস হারানো ও ধীর গতির কাজ হওয়ায় ও অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে কুলিয়ে উঠতে কষ্ট হচ্ছে তার।

সরকারি কিংবা বেসরকারি অনুদান অথবা ভাতার ব্যবস্থা করা হলে কিছুটা সহজ হতো তার পারিবারিক জীবন।

এই অদম্য পরিশ্রমী ও একনিষ্ঠ অনুকরণীয় ব্যক্তি যিনি প্রতিক হয়ে উঠেছেন জীবন সংগ্রামের তার পাশে সজ্জন মানুষেরা এগিয়ে আসবেন বলে আমি আশাবাদী।

Translate »

জীবন যুদ্ধে জয়ী আত্মবিশ্বাসী ওবায়দুরের কথা

আপডেট সময় : ০৮:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩

হাজী কাউছার
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের চুউরিয়া গ্রামের লোকাল ইলেকট্রিকশিয়ান বা মেকানিক হিসেবে পরিচিত জীবন সংগ্রামে হার না মানা মোঃ ওবায়দুর রহমান (৩৫)।

১৩ বছর ধরে নবীনগর পৌরসভার মাঝিকাড়াস্থ কনিকাড়া নৌকা ঘাটে (দোকানে) বৈদ্যুতিক মালামল মেরামত করে আসছেন তিনি।

বিশেষ করে ফ্যান, মটর, জেনারেটর মেরামত ও কয়েল বাঁধাইয়ের কাজ করে থাকেন। বর্তমানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নবীনগর পৌরসভাস্থ আলীয়াবাদ দক্ষিণ পাড়ায়। ৩ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক তিনি।

১০ বছর আগে বৈদ্যুতিক কাজ করতে গিয়ে ইলেকট্রিক শকে ডান হাত হারান তিনি। দীর্ঘ দিনের অমানুষিক কষ্টের পর যখন সেরে উঠে ক্ষত তখন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারি হিসেবে পরিবারের হাল ধরতে শুরু করেন ইলেকট্রিক কাজ দিয়ে।

অন্য কোন কাজ জানা না থাকায় ও পুজির অভাবে এক হাত দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। প্রথম দিকে এক হাত দিয়ে কাজ করতে কষ্ট হলেও অভিজ্ঞতা আর একনিষ্ঠ শ্রমে এখন তিনি আগের মতই নিখুঁত ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

হতাশাগ্রস্ত, বেকার মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন তিনি। তাকে দেখলে যেন মানুষের হতাশা কেটে যায়। কিছু একটা কর্মসংস্থান করে যেন বাঁচার তাগিদ খুঁজে পায় অন্যরা।

ওবায়দুর রহমান জানান, শক খাওয়ার পর হাতটা কাইট্টা লাইতে অইচে। অনেক দিন বেকার আছিলাম। কাম কাইজ করতাম পারছি না। অহন আল্লার রহমতে ভালা আছি।

পাশবর্তী হোটেল ব্যবসায়ী ফয়সাল মিয়া বলেন, মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর কাজ করেন ইলা (ওবায়দুর রহমান)।

রুবেল মিয়া নামে একজন বলেন, আমি তো প্রথমে উনাকে দেখে বিশ্বাসই করতে পারতেছিলাম যে উনি এক হাত দিয়ে ফ্যানের কয়েল বাঁধাই করতে পারবেন! পরে দাঁড়িয়ে থেকে উনার কাজ করতে দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।

আত্মবিশ্বাসী ওবায়দুর রহমানের এক হাত দিয়ে কাজ করার দৃশ্য স্বাভাবিক মনে হলেও একদিকে অনেকের বিশ্বাস হারানো ও ধীর গতির কাজ হওয়ায় ও অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে কুলিয়ে উঠতে কষ্ট হচ্ছে তার।

সরকারি কিংবা বেসরকারি অনুদান অথবা ভাতার ব্যবস্থা করা হলে কিছুটা সহজ হতো তার পারিবারিক জীবন।

এই অদম্য পরিশ্রমী ও একনিষ্ঠ অনুকরণীয় ব্যক্তি যিনি প্রতিক হয়ে উঠেছেন জীবন সংগ্রামের তার পাশে সজ্জন মানুষেরা এগিয়ে আসবেন বলে আমি আশাবাদী।