জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিকসে রেকর্ড গড়েছেন কুড়িগ্রামের মোহাম্মদ শাওন
- আপডেট সময় : ০১:৪৩:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪ ৫২ বার পড়া হয়েছে
আমীনুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
এ যেন স্বপ্নের মতো এক দিন তাঁর জন্য। যে দিনটি মোহাম্মদ শাওনকে ভাসিয়েছে আনন্দে। এনেছে প্রচারের আলোয়। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ শুরু হওয়া তিন দিনের শেখ কামাল ৩৮তম জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিকসের প্রথম দিনের উজ্জ্বল মুখ কুড়িগ্রামের তরুণ। অনূর্ধ্ব-১৮ বালক বিভাগে ১৫শ মিটার দৌড়ে রেকর্ড গড়েছেন শাওন।
সময় নিয়েছেন ৪ মিনিট ১৪.১২ সেকেন্ড (ইলেকট্রনিক বোর্ড)। এর আগে এই ইভেন্টে ২০১৮ সালে রেকর্ড ছিল নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিজয় মল্লিকের। সময় নিয়েছিলেন ৪ মিনিট ১৯.২০ সেকেন্ড (ইলেকট্রনিক বোর্ড)।
গত বছর ঢাকায় শেখ কামাল স্কুল ও মাদ্রাসা অ্যাথলেটিকসের চূড়ান্ত পর্বে খেলেছেন। দ্বিতীয়বার ঢাকায় এসেই বাজিমাত। নিজেই অবাক জাতীয় স্তরে এসে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে।
তবে এখানেই না থেমে শাওন এগিয়ে যেতে চান অনেক দূর। যদিও জানেন এগিয়ে চলার পথটা মসৃণ নয়। এরই মধ্যে তাঁকে মুখোমুখি হতে হয়েছে জীবনের নানা বাস্তবতার।
চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় শাওন। মাদ্রাসায় দশম শ্রেণিতে পড়ছেন। কিন্তু পড়ার চেয়ে খেলায় আগ্রহ বেশি। তাই তো কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে ছুটে যাওয়া, দৌড় অনুশীল করা।
স্প্রিন্টে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভালো কিছু না হওয়ায় কোচের পরামর্শে দূরপাল্লার দৌড়ে আসা। আজ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে নিজেকে মেলে ধরা শাওন নিজের পরিশ্রমকে কিছুটা সার্থক মনে করছেন।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ শুরু হয়েছে ৩৮তম জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিকসবাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন পরিবারের নির্দিষ্ট আয় বলতে কিছু নেই। নেই নিজেদের কোনো জমিজমা।
বাবা মোফাচ্ছেল হক অন্যের জমিতে কাজ করেন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে। বাবাকে কৃষিকাজে সহায়তা করে ছেলে শাওনও।
শুধু তা–ই নয়, নিজেই এরপর দিলেন চমকে যাওয়া তথ্য, ‘কিছুদিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করেছি টাকার জন্য। দৈনিক পেতাম সাড়ে তিন শ টাকা। কষ্ট করেই আসলে চলতে হয়।’
দুঃখ করে জানালেন, দূরপাল্লার দৌড়ে ভালো করতে যেমন ভালো খাবার প্রয়োজন, সেটি তিনি পান না। এই জায়গায় বড় একটা ঘাটতি তাঁর রয়ে গেছে।
‘আর্থিকভাবে সচ্ছল হলে অনেক দূর যেতে পারতাম। তবু চেষ্টা করছি যতটুকু ভালো করা যায়’—বলতে বলতে মোহাম্মদ শাওনের চোখমুখে ফুটে ওঠে আত্মবিশ্বাস।