ঢাকা ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo লক্ষীপুররে কমলনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফারনে বসতঘর পুড়ে ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি Logo চাঞ্চল্যকর গরু ও মহিষ ডাকাতী মামলার রহস্য উদঘাটন, লুন্ঠিত ট্রাক উদ্ধার ও ডাকাতের মূল পরিকল্পনাকারীসহ ডাকাতদল গ্রেফতার Logo লক্ষীপুরের রায়পুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদক ও ডাকাতি মামলার তিন আসামি গ্রেপ্তার Logo চট্টগ্রাম বোয়াল খালিতে আমুচিয়া,আহল্লা কড়লডেঙ্গা ইউনিয়ন্ বিএনপির ইফতার মাহফিল Logo পলাশবাড়ীতে গৃহবধু ধর্ষনের শিকার। থানায় মামলা Logo দুদকের ২ মামলা শতকোটি টাকার মালিক পলিটেকনিক ইনস্ট্রাক্টর হুমায়ুন Logo প্রতিদিনের কাগজের প্রধান সম্পাদক খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার Logo ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে রায়পুরে ছাত্র-জনতার মশাল মিছিল Logo ভিত্তিহীন নিউজ প্রচার করে বিকাশ দাস কে সামাজিক যুগে যুগের মাধ্যমে হেয়প্রতিপন্ন অপপ্রচেষ্টা চালাচ্ছে কুচক্রি মহল Logo ধর্ষণের সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসি প্রকাশ্যে কার্যকরের দাবিতে রংপুরে মশাল মিছিল

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের মেধাবী ছাত্রী শাহরিয়ার জান্নাত ছোঁয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না

শহীদুল ইসলাম শহীদ
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৯:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪ ৭৪ বার পড়া হয়েছে

শহীদুল ইসলাম শহীদ,
স্টাফ রিপোর্টারঃ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কাঠগড়া দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী শাহরিয়া জান্নাত ছোঁয়া (১৫) স্বপ্ন দেখতো লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হয়ে পিতামাতার মূখ উজ্জল করবে। কিন্তু সে স্বপ্ন পুরণ হতে দিলো না প্রেমিক নামের প্রতারক রায়হান কবির মজিদ।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কাটগড়া দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে দু’জনেই অধ্যায়ন করতো। প্রথমে গড়ে উঠে সখ্যতা তারপর প্রেম। ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মজিদ পাশ করে স্কুল থেকে বিদায় নেয়। ইতিমধ্যে ছোয়া জানতে পারে প্রেমিক মজিদ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। পারিবারিকভাবে জানতে পারে সে ভাসমান পরিবারের সন্তান। ছোয়া তখন থেকেই বখাটে প্রেমিককে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বখাটে প্রেমিক মজিদ ছোঁয়ার স্কুল ও কোচিং-এর সহপাঠিদের মোবাইল ফোনে বিভিন্ন কথপোকথনসহ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাদের ব্যক্তিগত ছবি পোষ্ট করে এবং ছোয়াকে তার বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতায় প্রতিনিয়ত উত্ত্যোক্ত করতে থাকে। এক পর্যায় বখাটে প্রেমিক মজিদের উত্ত্যোক্ত সইতে না পেরে নিজের জীবন বৃত্তান্ত ডায়েরিতে নোট করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ছোঁয়ার সুন্দর হাস্যজ্জল চলাফেরা হঠাৎ আত্মহত্যার বিষয় তার পরিবার মেনে নিতে পারেনি।

পরিবারের সদস্যদের কৌতুহল বশত: মৃত্যুর ০২ দিন পর তার পাঠ্যপুস্তকে তার মা বিজলী বেগম নাড়াচারা করতেই ছোঁয়ার জীবন বৃত্তান্ত লিপিভুক্ত ডায়েরিটি খুঁজে পায়। ডায়েরীর ভিতরে লেখা তার চিঠিতে পরিবারের মনে নাড়া দিয়ে ওঠে। চিঠির ভাষায় লেখা ছিল “আম্মু আমাকে মাফ করে দিও, আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। বিশ্বাস করো আমি এতটা খারাপ না। আমি কিছুই করিনি। আমাকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমি এক নরপশুর সাথে ভুল করে ভালবাসায় জড়িয়েছিলাম। কিন্তু এই ভালবাসা আমার জীবনের ইতি টানতে বাধ্য করলো। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই প্রেমিক নামের নরপশু আমাকে বাঁচতে দিল না। সে আমাকে কাফনের কাপড় পরিয়েই ছাড়লো”। এই ডায়রির লেখা ফটোকপি প্রতিবেদকের নিকট তার মা দেন এবং বলেন আমার সন্তানের মত কোন পরিবারের যাতে এ রকম না হয় সেজন্য দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেন।

এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের নগর কাটগড়া গ্রামে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে ছোঁয়া ওই গ্রামের শাহজাহান মিয়ার মেয়ে। সকলের অজান্তে ছোঁয়া তার শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। এ নিয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়। লাশ ময়না তদন্তের পর পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে লাশ দাফন সম্পন্ন হলে ২৪ ফেব্রুয়ারি ছোঁয়ার পরিবার ও সহপাঠিরা এই আত্মহত্যাকে প্ররোচিত আত্মহত্যা বলে দাবী করে মানববন্ধন করেন এবং এর সাথে জড়িত বখাটে প্রেমিক রায়হান কবির মজিদকে আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শস্তির দাবী জানান।

পারিবার সূত্রে জানা যায়, বখাটে মজিদ একই ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা রেল কলোনী পাড়ার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনার পর থেকে মজিদ গা ঢাকা দিয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলেই মামলার তদন্ত অগ্রগতি হবে।

ট্যাগস :
Translate »

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের মেধাবী ছাত্রী শাহরিয়ার জান্নাত ছোঁয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না

আপডেট সময় : ০৪:৪৯:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

শহীদুল ইসলাম শহীদ,
স্টাফ রিপোর্টারঃ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কাঠগড়া দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী শাহরিয়া জান্নাত ছোঁয়া (১৫) স্বপ্ন দেখতো লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হয়ে পিতামাতার মূখ উজ্জল করবে। কিন্তু সে স্বপ্ন পুরণ হতে দিলো না প্রেমিক নামের প্রতারক রায়হান কবির মজিদ।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কাটগড়া দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে দু’জনেই অধ্যায়ন করতো। প্রথমে গড়ে উঠে সখ্যতা তারপর প্রেম। ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মজিদ পাশ করে স্কুল থেকে বিদায় নেয়। ইতিমধ্যে ছোয়া জানতে পারে প্রেমিক মজিদ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। পারিবারিকভাবে জানতে পারে সে ভাসমান পরিবারের সন্তান। ছোয়া তখন থেকেই বখাটে প্রেমিককে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বখাটে প্রেমিক মজিদ ছোঁয়ার স্কুল ও কোচিং-এর সহপাঠিদের মোবাইল ফোনে বিভিন্ন কথপোকথনসহ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাদের ব্যক্তিগত ছবি পোষ্ট করে এবং ছোয়াকে তার বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতায় প্রতিনিয়ত উত্ত্যোক্ত করতে থাকে। এক পর্যায় বখাটে প্রেমিক মজিদের উত্ত্যোক্ত সইতে না পেরে নিজের জীবন বৃত্তান্ত ডায়েরিতে নোট করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ছোঁয়ার সুন্দর হাস্যজ্জল চলাফেরা হঠাৎ আত্মহত্যার বিষয় তার পরিবার মেনে নিতে পারেনি।

পরিবারের সদস্যদের কৌতুহল বশত: মৃত্যুর ০২ দিন পর তার পাঠ্যপুস্তকে তার মা বিজলী বেগম নাড়াচারা করতেই ছোঁয়ার জীবন বৃত্তান্ত লিপিভুক্ত ডায়েরিটি খুঁজে পায়। ডায়েরীর ভিতরে লেখা তার চিঠিতে পরিবারের মনে নাড়া দিয়ে ওঠে। চিঠির ভাষায় লেখা ছিল “আম্মু আমাকে মাফ করে দিও, আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। বিশ্বাস করো আমি এতটা খারাপ না। আমি কিছুই করিনি। আমাকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমি এক নরপশুর সাথে ভুল করে ভালবাসায় জড়িয়েছিলাম। কিন্তু এই ভালবাসা আমার জীবনের ইতি টানতে বাধ্য করলো। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই প্রেমিক নামের নরপশু আমাকে বাঁচতে দিল না। সে আমাকে কাফনের কাপড় পরিয়েই ছাড়লো”। এই ডায়রির লেখা ফটোকপি প্রতিবেদকের নিকট তার মা দেন এবং বলেন আমার সন্তানের মত কোন পরিবারের যাতে এ রকম না হয় সেজন্য দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেন।

এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের নগর কাটগড়া গ্রামে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে ছোঁয়া ওই গ্রামের শাহজাহান মিয়ার মেয়ে। সকলের অজান্তে ছোঁয়া তার শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। এ নিয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়। লাশ ময়না তদন্তের পর পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে লাশ দাফন সম্পন্ন হলে ২৪ ফেব্রুয়ারি ছোঁয়ার পরিবার ও সহপাঠিরা এই আত্মহত্যাকে প্ররোচিত আত্মহত্যা বলে দাবী করে মানববন্ধন করেন এবং এর সাথে জড়িত বখাটে প্রেমিক রায়হান কবির মজিদকে আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শস্তির দাবী জানান।

পারিবার সূত্রে জানা যায়, বখাটে মজিদ একই ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা রেল কলোনী পাড়ার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনার পর থেকে মজিদ গা ঢাকা দিয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলেই মামলার তদন্ত অগ্রগতি হবে।