ঢাকা ০৪:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল ও শিক্ষা বৃত্তির চেক প্রদান Logo ।ফটিকছড়ির নাজিরহাট বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা Logo পলাশবাড়ীতে যুবদলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত Logo লক্ষীপুরে দুর্বৃত্তের হাত থাকে স্বামীকে বাচাতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গৃহবধূ নিহত Logo বাতিল হচ্ছে জাতীয় ৮ দিবস Logo গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গাজীপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে নালিশি জমিতে ১৪৪ ধারা জারী Logo ডাবল গরু ফুটবল টুর্নামেন্টে জগদলকে ট্রাইবেকারে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন শাইখ স্পোর্টস বিরামপুর  Logo সুন্দরগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত  উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর মতবিনিময় সভা Logo চট্টগ্রাম বোয়াল খালিতে গৃহবধূ লিজাকে পরিকল্পিত হত্যা ও হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল Logo সুন্দরগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত  উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর মতবিনিময় সভা

কার্যকরীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের ঘাটতি কোথায় ?

মোঃ হাসানুজ্জামান সিনিয়র রিপোর্টার:
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২৮ বার পড়া হয়েছে

এইতো সেদিনের কথা, মাত্র দেড় বছর আগেও নানাবিধ সমস্যায় জর্জড়িত হয়ে দেউলিয়া পথে যায় শ্রীলঙ্কা। অর্থনেতিক মন্দা, বাজার পরিস্থিতি মাত্রাতিরিক্ত অস্থিতিশীল, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায়, জনগণের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে হয় সেদেশের সরকারকে।
অথচ মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই নিজেদেরকে গুছিয়ে নিয়েছে এই দেশটি। কিন্তু বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোটেও এমন নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু কোথায় যেন একটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। আসলে এর জন্য মন্ত্রী, আমলা ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক নীতিনির্ধারকেরা।

তারা বলছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থ, বাণিজ্য, সম্পদ-পরিসম্পদ সব মিলিয়ে বেশ ভালো পরিবেশ বিদ্যমান রাখা সম্ভব। কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজারে যে আগুন লেগেছে, তা মনুষ্য সৃষ্ট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলেই এর সমাধান সম্ভব। কারণ এমন অস্বাভাবিক পণ্যমূল্য বৃদ্ধির মধ্য দিয়েই শ্রীলঙ্কা দেউলিয়ার রাজ্যে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে সেদেশে অন্যান্য সমস্যাও যোগ হয়। কারণ নিত্যপণ্য – দ্রব্য সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে, তাদের কাছে আর অন্যান্য ভালোকেও ভালো মনে হয় না।
বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোটেও এমন নয়। চাইলেই এখান থেকে উত্তরণের সুযোগ আছে।’

সম্প্রতি ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ঋণের ৭৫ শতাংশ ফেরত দিল শ্রীলঙ্কা। এর আগে ২১ আগস্ট ৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়। ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ঋণের ৭৫ শতাংশ ফেরত দিল শ্রীলঙ্কা। দুই বছর আগে কারেন্সি সোয়াপ চুক্তির আওতায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় দেশটি। এর আগে ২১ আগস্ট ৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) আমাদের কাছে ১০০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দিয়েছে। বাকি ৫০ মিলিয়ন ডলার তারা যথাসময়ে ফেরত দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে ২০২১ সালের আগস্টে দেশের রিজার্ভ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয় বাংলাদেশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তার মতে, যদিও তিন কিস্তিতে নয় মাসের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধের কথা ছিল। তবে আর্থিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার সুবিধার্তে পরিশোধের সময় তিনবার বাড়িয়ে ২৭ মাস করা হয়েছে। বর্ধিত মেয়াদ সেপ্টেম্বরে শেষ হবে বলে জানান তিনি।

চুক্তি অনুযায়ী, ঋণের বিপরীতে শ্রীলঙ্কা লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার রেট (লিবোর) এর পাশাপাশি বাংলাদেশকে ১.৫ শতাংশ সুদ প্রদান করার কথা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, চুক্তি অনুসারে প্রথম কিস্তিতে শ্রীলঙ্কা ১.৫ শতাংশ সুদের পাশাপাশি বর্তমান ৫.৪ শতাংশ লিবোর হার প্রদান করেছে। দেশটি আরও ৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতির কারণে দ্বীপরাষ্ট্রটি ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ২.৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার জন্য আলোচনা করছে। আইএমএফের বেলআউটের জন্য অপরিহার্য হলো বহিরাগত ঋণ পুনর্গঠন করা, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।শ্রীলঙ্কা সম্প্রতি জানিয়েছে, দেশের মূল্যস্ফীতি ৬.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। এর মাধ্যমে দুই বছরের মধ্যে প্রথমবার মূল্যস্ফীতি এককের ঘরে নেমেছে।

অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া পর্যটন ও রেমিটেন্স থেকে আসা ডলারের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। বিষয়টি ঋণ পুনর্গঠনের মাধ্যমে আইএমএফের বেলআউট পেতে দেশটিকে সহায়তা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

তাছাড়া লক্ষ্য করলে দেখা যায়, শ্রীলঙ্কায় এখন আর পূর্বের মতো অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতি ও দুর্নীতি নেই। মাত্রাটা খুবই কম।তাই বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ‘বাংলাদেশে কিছু অসাধু চক্র ও অতিমুনাফা লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রয়েছে। এরাই ইচ্ছাকৃতভাবে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করে। এর সাথে কিছু সরকারি আমলা ও উপরমহলেরও যোগসাজশ রয়েছে। এদের কালো থাবা থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে একমাত্র শেখ হাসিনা সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

ট্যাগস :
Translate »

কার্যকরীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের ঘাটতি কোথায় ?

আপডেট সময় : ০৮:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

এইতো সেদিনের কথা, মাত্র দেড় বছর আগেও নানাবিধ সমস্যায় জর্জড়িত হয়ে দেউলিয়া পথে যায় শ্রীলঙ্কা। অর্থনেতিক মন্দা, বাজার পরিস্থিতি মাত্রাতিরিক্ত অস্থিতিশীল, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায়, জনগণের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে হয় সেদেশের সরকারকে।
অথচ মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই নিজেদেরকে গুছিয়ে নিয়েছে এই দেশটি। কিন্তু বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোটেও এমন নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু কোথায় যেন একটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। আসলে এর জন্য মন্ত্রী, আমলা ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক নীতিনির্ধারকেরা।

তারা বলছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থ, বাণিজ্য, সম্পদ-পরিসম্পদ সব মিলিয়ে বেশ ভালো পরিবেশ বিদ্যমান রাখা সম্ভব। কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজারে যে আগুন লেগেছে, তা মনুষ্য সৃষ্ট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলেই এর সমাধান সম্ভব। কারণ এমন অস্বাভাবিক পণ্যমূল্য বৃদ্ধির মধ্য দিয়েই শ্রীলঙ্কা দেউলিয়ার রাজ্যে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে সেদেশে অন্যান্য সমস্যাও যোগ হয়। কারণ নিত্যপণ্য – দ্রব্য সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে, তাদের কাছে আর অন্যান্য ভালোকেও ভালো মনে হয় না।
বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোটেও এমন নয়। চাইলেই এখান থেকে উত্তরণের সুযোগ আছে।’

সম্প্রতি ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ঋণের ৭৫ শতাংশ ফেরত দিল শ্রীলঙ্কা। এর আগে ২১ আগস্ট ৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়। ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ঋণের ৭৫ শতাংশ ফেরত দিল শ্রীলঙ্কা। দুই বছর আগে কারেন্সি সোয়াপ চুক্তির আওতায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় দেশটি। এর আগে ২১ আগস্ট ৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) আমাদের কাছে ১০০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দিয়েছে। বাকি ৫০ মিলিয়ন ডলার তারা যথাসময়ে ফেরত দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে ২০২১ সালের আগস্টে দেশের রিজার্ভ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয় বাংলাদেশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তার মতে, যদিও তিন কিস্তিতে নয় মাসের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধের কথা ছিল। তবে আর্থিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার সুবিধার্তে পরিশোধের সময় তিনবার বাড়িয়ে ২৭ মাস করা হয়েছে। বর্ধিত মেয়াদ সেপ্টেম্বরে শেষ হবে বলে জানান তিনি।

চুক্তি অনুযায়ী, ঋণের বিপরীতে শ্রীলঙ্কা লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার রেট (লিবোর) এর পাশাপাশি বাংলাদেশকে ১.৫ শতাংশ সুদ প্রদান করার কথা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, চুক্তি অনুসারে প্রথম কিস্তিতে শ্রীলঙ্কা ১.৫ শতাংশ সুদের পাশাপাশি বর্তমান ৫.৪ শতাংশ লিবোর হার প্রদান করেছে। দেশটি আরও ৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতির কারণে দ্বীপরাষ্ট্রটি ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ২.৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার জন্য আলোচনা করছে। আইএমএফের বেলআউটের জন্য অপরিহার্য হলো বহিরাগত ঋণ পুনর্গঠন করা, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।শ্রীলঙ্কা সম্প্রতি জানিয়েছে, দেশের মূল্যস্ফীতি ৬.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। এর মাধ্যমে দুই বছরের মধ্যে প্রথমবার মূল্যস্ফীতি এককের ঘরে নেমেছে।

অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া পর্যটন ও রেমিটেন্স থেকে আসা ডলারের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। বিষয়টি ঋণ পুনর্গঠনের মাধ্যমে আইএমএফের বেলআউট পেতে দেশটিকে সহায়তা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

তাছাড়া লক্ষ্য করলে দেখা যায়, শ্রীলঙ্কায় এখন আর পূর্বের মতো অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতি ও দুর্নীতি নেই। মাত্রাটা খুবই কম।তাই বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ‘বাংলাদেশে কিছু অসাধু চক্র ও অতিমুনাফা লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রয়েছে। এরাই ইচ্ছাকৃতভাবে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করে। এর সাথে কিছু সরকারি আমলা ও উপরমহলেরও যোগসাজশ রয়েছে। এদের কালো থাবা থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে একমাত্র শেখ হাসিনা সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।’