একজন ‘রক্তযোদ্ধা’ রিশাদের না বলা কথা

- আপডেট সময় : ১২:১৩:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ২০০ বার পড়া হয়েছে

মোঃ রনি (টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি)
বছরের পর বছর স্বেচ্ছায় মুমূর্ষু রোগীদের নিয়মিত রক্ত দান করে মানবতার সেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন টাংগাইলের ধনবাড়ী উপজেলার গোলাম রব্বানী রিশাদ। এ পর্যন্ত প্রায় ২শত ব্যাগ রক্ত দিয়ে মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচিয়ে তোলার কাজে এগিয়ে এসেছেন। এখানেই তিনি থেমে থাকেননি। বন্ধু আনোয়ারকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন “আলোর দিশারী ক্বওমী ব্লাড ফাউন্ডেশন” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ধনবাড়ী,মধুপৃুর,গোপালপুরসহ বিভিন্ন উপজেলা এবং পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ, জামালপুর জেলার মানুষ বিনামূল্যে রক্ত পাচ্ছেন এখান থেকে।
গোলাম রব্বানী রিশাদ একজন রক্তযোদ্ধা। নিয়মিত রক্তদাতা। রক্ত প্রয়োজন, এমন কথা শুনলে সে অস্থির হয়ে যায় রক্ত জোগাড় করে দিতে। বিভিন্নভাবে দক্ষতা ও সফলতা দেখিয়েছেন। নিজ এলাকায় তাকে সবাই খুব পছন্দ করে। অন্যকে সাহায্য করতে কখনো দ্বিতীয়বার চিন্তা করেন না এ রিশাদ।
মানুষের রক্ত লাল। এ লাল ভালোবাসা বিলিয়ে শান্তি পান রিশাদ।
টাংগাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মিয়াপাড়া গ্রামের মোঃ মাহমুদুল আমীন রইচের ছেলে গোলাম রব্বানী রিশাদ। তাঁর পিতা একজন শিক্ষক। পড়াশোনার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনও পরিচালনা করেন রিশাদ। সরকারি ধনবাড়ী নওয়াব ইনস্টিটিউশন থেকে এসএসসি পাস করে ধনবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষা দেন।
একই সঙ্গে ‘ফ্রি ব্লাড ডোনেশন ময়মনসিংহ’ এবং ‘ব্লাড ডোনারস ফ্যামেলী,ধনবাড়ী,টাংগাইল’ নামে দুইটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যকরী সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন।
কারো রক্তের প্রয়োজন পড়লে রিশাদ তা সংগ্রহ করে দেয়ার চেষ্টা করেন। তার অধীনে ৫শতাধিক শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ রয়েছে তার সংগঠনে।
গোলাম রব্বানী রিশাদ জানান, মানুষ যখন খুব বিপদে পড়ে তখন অন্য কারো শরণাপন্ন হয়। বিশেষ করে যখন রক্তের প্রয়োজন হয়, তখন মানুষ দিশাহারা হয়ে ওঠে। কোথায় পাবে, কীভাবে পাবে, কার সঙ্গে যোগাযোগ করলে রক্ত পাওয়া যাবে? সেই চিন্তা যেন তখন আকাশ সমান হয়ে দাঁড়ায়। এরই মধ্যে একটা অন্যরকম অনুভূতি হয় তখন, যখন কারও বিপদে পাশে দাঁড়াতে পারি। রক্তের পোস্ট বা মেসেজ পেলেই সাধ্যমতো চেষ্টা করি রক্ত জোগাড় করে দিতে। যখন রক্ত জোগাড় করে দিই তখন রক্ত গ্রহীতা ও তার আত্মীয়-স্বজনের হাসিমুখ দেখতে পাই। তখনকার অনুভূতি বোঝানোর মতো নয়। রক্ত জোগাড় করে দিলে মনে প্রশান্তি কাজ করে। কারও মুখে হাসি ফোটাতে পারার আনন্দ আসলেই অন্যরকম।
রিশাদ নিয়মিত তিন মাস পরপর রক্ত দান করেন। তিনি রক্তদানকে অনেক বড় সওয়াবের কাজ বলে সম্বোধন করেন। স্বপ্ন দেখেন রক্তের কোন অভাব থাকবে না বাংলাদেশে। সবাই রক্তদানে উৎসাহিত হবেন।